বাংলা - Bangla - শব্দ বুঝি বাক্য লিখি - শব্দদ্বিত্ব খুঁজি

'নদী' কবিতায় এমন কিছু শব্দের প্রয়োগ আছে যেগুলো একই রকমের দুটি শব্দ দিয়ে তৈরি; যেমন কল+কল কলকল। কিছু শব্দ আবার সামান্য বদলে ভিন্ন রকম হয়েছে; যেমন হেলা+হেলি=হেলাহেলি। আবার কিছু শব্দ পাশাপাশি দুইবার এসেছে; যেমন ঘুরে+ঘুরে ঘুরে ঘুরে। কবিতাটি থেকে এই ধরনের অন্তত দশটি শব্দ খুঁজে বের করো এবং নিচে লেখো। লেখা শেষ হলে সহপাঠীর সঙ্গে মেলাও এবং প্রয়োজনে সংশোধন করো।

 

শব্দদ্বিত্ব

অভিন্ন বা সামান্য পরিবর্তিত চেহারায় কোনো শব্দ পরপর দুইবার ব্যবহৃত হলে তাকে শব্দদ্বিত্ব বলে। শব্দদ্বিত্ব তিন ধরনের: ধ্বন্যাত্মক দ্বিত্ব, অনুকার দ্বিত্ব ও পুনরাবৃত্ত দ্বিত্ব।

ক. ধ্বন্যাত্মক দ্বিত্ব

কোনো প্রাকৃতিক ধ্বনির অনুকরণে যেসব শব্দ তৈরি হয়, সেগুলোকে ধ্বন্যাত্মক শব্দ বলে। একাধিক ধ্বন্যাত্মক শব্দ মিলে ধ্বন্যাত্মক দ্বিত্ব তৈরি হয়। যেমন, কোনো ধাতব পদার্থের সঙ্গে অন্য কিছুর সংঘর্ষে 'ঠন' ধ্বনি শোনা যায়। এই 'ঠন' একটি ধ্বন্যাত্মক শব্দ। 'ঠন' শব্দটি পরপর দুবার ব্যবহৃত হলে 'ঠন ঠন' ধ্বন্যাত্মক দ্বিত্ব সৃষ্টি হয়। অনেক সময়ে কল্পিত ধ্বনির ভিত্তিতেও ধ্বন্যাত্মক দ্বিত্ব তৈরি হতে পারে। যেমন-টনটন, ছমছম।

কয়েকটি ধ্বন্যাত্মক দ্বিত্বের উদাহরণ:

কুট কুট, কোঁত কোঁত, কুটুস-কুটুস, খক খক, খুটুর-খুটুর, টুং টুং, ঠুক ঠুক, ধুপ ধূপ, দুম দুম, ঢং ঢং, চকচক, জ্বলজ্বল, ঝমঝম, টসটস, থকথকে, ফুসুর ফাসুর, ভটভট, শোঁ শোঁ, হিস হিস।

খ. অনুকার দ্বিত্ব

পরপর প্রয়োগ হওয়া কাছাকাছি চেহারার শব্দকে অনুকার দ্বিত্ব বলে। এতে প্রথম শব্দটি অর্থপূর্ণ হলেও প্রায় ক্ষেত্রে দ্বিতীয় শব্দটি অর্থহীন হয় এবং প্রথম শব্দের অনুকরণে তৈরি হয়। যেমন: অঙ্ক-টঙ্ক, চুপচাপ ইত্যাদি। অনুকার দ্বিত্বের দ্বিতীয় অংশে ব্যঞ্জনধ্বনির পরিবর্তন ঘটে; যেমন:

অঙ্ক-টঙ্ক, আম-টাম, কেক-টেক, ঘর-টর, গরু-টরু, ছাগল-টাগল, ঝাল-টাল, হেন-তেন, লুচিফুচি, টাটু-ফাটু, আগড়ম-বাগড়ম, এলোমেলো, ঝিকিমিকি, কচর-মচর, ঝিলমিল, শেষ-মেষ, অল্পসল্প, বুদ্ধিশুদ্ধি, গুটিশুটি, মোটাসোটা, নরম-সরম, ব্যাপার-স্যাপার, বুঝে-সুঝে।

অনুকার দ্বিত্বের দ্বিতীয় অংশে স্বরধ্বনির পরিবর্তন ঘটে; যেমন:

আড়াআড়ি, খোঁজাখুঁজি, ঘোরাঘুরি, চুপচাপ, ঠেকাঠেকি, তাড়াতাড়ি, দলাদলি, দামাদামি, পাকাপাকি, বাড়াবাড়ি, মোটামুটি, টুকরো-টাকরা, ধারধোর, জোগাড়-জাগাড়।

গ. পুনরাবৃত্ত দ্বিত্ব

একই শব্দ পরপর দুইবার ব্যবহৃত হলে তাকে পুনরাবৃত্ত দ্বিত্ব বলে। যেমন: জ্বর জ্বর, হাতে হাতে ইত্যাদি। পুনরাবৃত্ত দ্বিত্ব বিভক্তিহীন হতে পারে; যেমন:

পর পর, কবি কবি, ভালো ভালো, কত কত, হঠাৎ হঠাৎ, ঘুম ঘুম, উড়ু উড়ু, গরম গরম, হায় হায়। পুনরাবৃত্ত দ্বিত্ব বিভক্তিযুক্ত হতে পারে; যেমন:

হাতে হাতে, কথায় কথায়, জোরে জোরে, মজার মজার, ঝাঁকে ঝাঁকে, চোখে চোখে, মনে মনে, সুরে সুরে, পথে পথে।

Content added || updated By
Promotion